হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের নিয়ম

 


হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা 


বর্তমান সময়ের একটি জনপ্রিয় যোগাযোগের মাধ্যম হলো হোয়াটসঅ্যাপ। হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের নিয়ম বেশ সহজ। তাই অনেকেই ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইন্সটাগ্রামের চেয়ে, হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করতে বেশি পছন্দ করে থাকে।

বিশ্বের প্রায় ২ কোটি মানুষ এখন হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে থাকে। দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এটি ব্যবহার করা খুবই সোজা, তবে যারা নতুন তারা অনেকেই হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানেনা। আজ আমরা আলোচনা করব কিভাবে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করা যায়।

বলে রাখা ভাল, হোয়াটসঅ্যাপ কিন্তু ফেসবুকের মালিকানাধীন কোম্পানি। অদূর ভবিষ্যৎতে হয়তো, ফেসবুক মেসেঞ্জার, ইন্সটাগ্রাম মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপ একসাথে ব্যবহার করা যাবে মানে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মেসেঞ্জারে কল বা মেসেজ পাঠানো যাবে। যাই-হোক ভবিষ্যতের আলোচনা ভবিষ্যতে করবো। এখন, হোয়াটসঅ্যাপ চালানোর নিয়ম জানা যাক।

হোয়াটসঅ্যাপ ডাউনলোড

সকল সাপোর্টেড প্ল্যাটফর্মের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে। আইওএস, অ্যান্ড্রয়েড, ম্যাক, ও উইন্ডোজ কম্পিউটারে ব্যবহার করা যাবে হোয়াটসঅ্যাপ। হোয়াটসঅ্যাপ ইন্সটল করতে ক্লিক করুন।


একাউন্ট সেটাপ

হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্ট খোলা বেশ সহজ। ইন্টারনেট কানেকশন আছে এমন যেকোনো ডিভাইসে ফোন নাম্বার ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্ট খোলা যাবে। 👉 হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্ট খোলার নিয়ম জানুন। একাউন্ট খোলার পর ফোনে থাকা কনটাক্টস ও ফটোস এর অ্যাকসেস পারমিশন এলাউ (Allow) করে দিন। একাউন্ট খোলা হয়ে গেলে অন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের সাথে চ্যাট করতে পারবেন।

মেন্যু থেকে সেটিংসে প্রবেশ করে হোয়াটসঅ্যাপ এ সেট করা নিজের নাম ও ছবিযুক্ত অংশে ট্যাপ করে হোয়াটসঅ্যাপ এ প্রদর্শিত নাম, ছবি ও এবাউট সেকশন এডিট করা যাবে।


হোয়াটসঅ্যাপ ফোন নাম্বার পরিবর্তন

ফোন নাম্বার পরিবর্তন করলে আগের হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্ট ডিলিট করে নতুন নাম্বারে হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্ট খোলার প্রয়োজন নেই। ফোন নাম্বার পরিবর্তন করলে চ্যাট ও কন্টাক্টসমূহ একই রেখে হোয়াটসঅ্যাপে নাম্বার পরিবর্তন করা যাবে।

হোয়াটসঅ্যাপের নাম্বার পরিবর্তন করতে সেটিংসে প্রবেশ করুন ও Account এ ট্যাপ করুন। এরপর Change নাম্বারে ট্যাপ করলে নাম্বার পরিবর্তন করার অপশন দেখতে পাবেন, Next চাপুন। প্রথমে বর্তমান মোবাইল নাম্বার ও এরপর নতুন হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার প্রদান করে Next চেপে সেভ করুন।

উল্লিখিত উপায়ে হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার পরিবর্তন করলে আগের একাউন্টের সকল তথ্য, গ্রুপ ও সেটিংস নতুন নাম্বারে শিফট হয়ে যাবে। পূর্বের সকল মেসেজ ঠিকই থেকে যাবে। এছাড়াও কন্টাক্টসমূহের কাছে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার পরিবর্তনের নোটিফিকেশন পৌছে যাবে।

প্রাইভেসি সেটিংস

লাস্ট সিন, প্রোফাইল ফটো, এবাউট, স্ট্যাটাস, ইত্যাদি তথ্য কারা দেখতে পাবে তা নির্বাচন করার সম্পূর্ণ অধিকার রাখেন হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীগণ। হোয়াটসঅ্যাপ সেটিংস থেকে Account > Privacy সেকশনে প্রবেশ করলে হোয়াটসঅ্যাপে প্রদর্শিত তথ্যের প্রাইভেসি সেটিংস ঠিক করা যাবে।


WhatsApp ব্যবহার করার নিয়ম


নতুন কন্টাক্ট এড করা

মোবাইলে ও সিমে থাকা সকল কনটাক্ট হোয়াটসঅ্যাপে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এড হয়ে যায়। আবার নতুন কাউকে হোয়াটসঅ্যাপে এড করার নিয়ম বেশ সহজ। কিউআর কোড স্ক্যান করে কিংবা ফোন নাম্বার সেভ করেও নতুন হোয়াটসঅ্যাপ কন্টাক্ট এড করা যায়। নতুন হোয়াটসঅ্যাপ কন্টাক্ট এড করতেঃ

এছাড়াও কোনো কন্টাক্ট যদি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার না করে থাকে, সেক্ষেত্রে চ্যাটস আইকনে ট্যাপ করে উক্ত কন্টাক্টের নামের পাশে থাকা INVITE বাটনে ট্যাপ করে হোয়াটসঅ্যাপে ইনভাইট করা যাবে।

চ্যাটিং

হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট করা খুব সহজ, এই কারণে হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক। অ্যাপে প্রবেশ করে চ্যাট আইকনে ট্যাপ করে কন্টাক্ট সিলেক্ট করলেই হবে। চ্যাটে টেক্সট এর পাশাপাশি ছবি, ভিডিও, ফাইল, লোকেশন, ইত্যাদি পাঠানো যাবে।

হোয়াটসঅ্যাপে হাই-কোয়ালিটি ছবি পাঠানো যাবে কি?

হ্যাঁ, হোয়াটসঅ্যাপে অরিজিনাল ছবি হাই রেজ্যুলেশনে পাঠানো যাবে। সেটিংসে প্রবেশ করে Storage and data মেন্যুতে প্রবেশ করে Photo upload quality তে ট্যাপ করে “Best quality” সিলেক্ট করলে যেকোনো ছবি হাই-কোয়ালিটি রুপে পাঠানো যাবে।

হোয়াটসঅ্যাপে কল দিলে কি টাকা কাটে?

সাধারণ মোবাইল নম্বর থেকে কল করলে যেকরম টাকা কাটে ওভাবে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে কল দিলে টাকা কাটেনা। তবে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলার জন্য ইন্টারনেট ডাটা দরকার হয়। এজন্য আপনার ফোনে এমবি অথবা ওয়াইফাই সংযোগ দরকার হবে।

গ্রুপ চ্যাট

হোয়াটসঅ্যাপে সর্বোচ্চ ২৫৬ জনকে নিয়ে গ্রুপ চ্যাট তৈরী করা যাবে, যেখানে সবাইকে মেসেজ, ফটোস ও ভিডিও পাঠানো যাবে। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের নাম দেওয়া যায়, নোটিফিকেশন মিউট বা কাস্টমাইজ করা, গ্রুপ ফটো সেট করা, ইত্যাদি করা যাবে। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলতেঃ

হোয়াটসঅ্যাপে প্রবেশ করে মেসেজ আইকনে ট্যাপ করুন

  • New Group এ ট্যাপ করুন
  • সর্বোচ্চ ২৫৬জন পর্যন্ত পার্টিসিপেন্ট এড করা যাবে একটি গ্রুপে
  • গ্রুপ চ্যাটের নাম ও গ্রুপ ফটো সেট করুন


হোয়াটসঅ্যাপ কতটা নিরাপদ

হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করা খুবই নিরাপদ। কারন এতে রয়েছে ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন’। এর মানে হচ্ছে এখানে যাদের মধ্যে বা যে দুই জনের মধ্যে কোন তথ্য আদান প্রদান হয়েছে, তা এই দুই জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কোন তৃতীয় পক্ষ তা দেখতে পাবে না।

আমরা জানি যে আজকাল বিভিন্ন সাইট থেকে বা এপ থেকে অনেকের প্রয়োজনীয় তথ্য বা ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয় এবং পরে তাদের বিভিন্ন হেনস্তার শিকার হতে হয়। হোয়াটসঅ্যাপ এই বিষয়টি থেকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দিচ্ছে। যদিও, সম্প্রতি তারা বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহারকারীদের তথ্য নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

যাইহোক আমরা অবশ্যই নিজেদের তথ্য শেয়ার করার সময় সতর্ক থাকব এবং অপরিচিত বা স্বল্প পরিচিত কোন ব্যক্তিকে আমাদের এমন কোন তথ্য শেয়ার করবো না, যাতে আমাদের কোন সমস্যা হতে পারে।

কোন ব্যক্তির দ্বারা কোন রকম হেনস্তার শিকার হলে তৎক্ষনাৎ তাকে ব্লক করে দিব ও সেই আইডির বিরুদ্ধে রিপোর্ট করব। এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপে রয়েছে টু স্টেপ ভ্যারিফিকেশন প্রোসেস, যেটা ছয় ডিজিটের পিন দিয়ে গঠিত।


হোয়াটসঅ্যাপ এর বৈশিষ্ট্য বা সুবিধা:

• আপনার ব্যক্তিগত কিংবা বন্ধু-বান্ধবদের মেসেজ হিস্টরি এনক্রিপটেড অবস্থায় থাকে। যার ফলে আপনি ছাড়া অন্য কেউ দেখতে পারে না, এমনকি হোয়াটসঅ্যাপের কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত।

• দ্রুত এবং ধীর গতির ইন্টারনেট সংযোগ দিয়েও, একসাথে ৮ জন মিলে ভিডিও এবং অডিও কলের সুবিধা।

• আপনার বন্ধু-বান্ধব কিংবা পরিবার নিয়ে গ্রুপ খুলতে পারার সুবিধা। পাশাপাশি এনক্রিপটেড মুডে গ্রুপ ব্যবহার করা সম্ভব। এর ফলে আপনি ছাড়া কেউ, মেসেজ হিস্টরি, ছবি, ভিডিও এবং ডকুমেন্টস অন্য কেউ দেখতে পারবেনা।

• পরিবার কিংবা বন্ধুদের মাঝে লোকেশন শেয়ার করার সুবিধা। পাশাপাশি যেকোনো মুহূর্তে লোকেশন বন্ধ ও করার সুযোগ রয়েছে।

• ফেসবুকের মত স্টরি কিংবা মাই ডে আপলোড করার সুবিধা এবং এটি ২৪ ঘন্টা পর অটোমেটিকলি বন্ধ হয়ে যায়।

• নির্দিষ্ট ছবি, ভিডিও, অডিও কিংবা ডকুমেন্টস কাঙ্খিত ব্যক্তির সাথে কনভারসেশন চলাকালীন, শুধুমাত্র একবার দেখানোর সুবিধা। (এটা এক প্রকারের প্রাইভেট চ্যাটিং বলতে পারেন। )

• গ্রুপ কলে কনভার্সেশন চলাকালীন যেকোনো মুহূর্তে বের হওয়ার সুবিধা। পাশাপাশি আপনি চাইলে আবার রি-জয়েনও করতে পারবেন। এছাড়াও এই অ্যাপে রয়েছে ছোট-বড় আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফিচার। যা জীবনযাত্রাকে আরো সহজ করে তোলে।


হোয়াটসঅ্যাপ এর খারাপ দিক:

• একই সময়ে একসঙ্গে একাধিক ডিভাইসে একাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন না।

• অ্যাপ এর তুলনায় ওয়েবসাইট খানিকটা স্লো।

• মাঝেমধ্যে বিভিন্ন ফিচারে ল্যাগিং সমস্যা। (ইউজারদের মতামত অনুযায়ী)

• একাউন্ট এনক্রিপটেড থাকা সত্ত্বেও, হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ আপনার/ আমার কিংবা আমাদের সম্বন্ধে যথেষ্ট তথ্য জানার ক্ষমতা রাখে। (বিভিন্ন টেকনোলজি রিলেটেড নিউজ পোর্টাল ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী।)

• আপনার পাঠানো মেসেজ পুনরায় রি-এডিট করতে পারবেন না।

• আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যেকোনো মুহূর্তে ফাঁস হতে পারে। ( টেকনোলজিস্টদের মতে ) তবে বিগত দিনেও বেশ কয়েকবার, হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের নামে তথ্য ফাঁস করার গুঞ্জন ইতিমধ্যে শোনা গেছে।


শেষ কথা,,,

এই ছিল আজকে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের নিয়ম নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। কঠিন বিষয়গুলো আমরা স্ক্রিনশটের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি। তারপরেও যদি, কোন বিষয় বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে, কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন।


আরো পড়ুন:

  1. আই ফোন সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত কোনো 
  2. প্রসেসর কি 
  3. বাংলাদেশে dslr ক্যামেরার দাম 
  4. সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?
  5. বিশ্বের সেরা 11টি জনপ্রিয় অনলাইন মোবাইল গেম
  6. নতুন গেমিং ল্যাপটপ 2022
  7. নতুন গেমিং পিসি 2022 |
  8. ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা দামের মধ্যে ভালো ফোন 
  9. কম্পিউটার ভাইরাস কি ? কম্পিউটারে ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কি ?
  10. 10000-এর নীচে সেরা ফোন |


0/পোস্ট এ কমেন্ট/Comments