মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা গুলো কি ?
Table of Contents
মোবাইল ফোনের গুরুত্ব ।
মোবাইল ফোনের বৈশিষ্ট্য –
যোগাযোগ
ছবি তোলা ও ভিডিও করা
মনোরঞ্জন করা
জিপিএস (GPS) ব্যবহার ----- ইত্যাদি
শিক্ষা ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের উপকারিতা
আরো পড়ুন - কম্পিউটার ভাইরাস কি? কম্পিউটারে ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কি ?
মোবাইল ফোনের ব্যবহার আজ প্রত্যেকেই করছেন এবং মনোরঞ্জন, কাম-কাজ, যোগাযোগ, সামাজিকীকরণ ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন এর ব্যবহার করা হচ্ছে।
বর্তমান সময়ে একটি স্মার্টফোন ছাড়া লোকেরা নিজের জীবন কল্পনাও করতে পারবেননা।
তবে, আগেকার সময়ে ছিল সেই ছোট ছোট আকারের মোবাইল যেগুলোর মাধ্যমে কেবল voice call, SMS ইত্যাদি সাধারণ কাজ গুলোই করা যেত।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা: আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় যত গুলো জিনিস পত্র রয়েছে তার মধ্যে বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোন হচ্ছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের রয়েছে বহুবিধ উপকারী দিক এবং সুবিধক। আবার অপকারিতার সংখ্যাও কম নয়। আমরা সকলেই জানি যে যেসব জিনিস এর উপকারিতা রয়েছে তার কিছু অপকারিতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
তবে চলুন মোবাইল ফোনের অপকারিতার দিক গুলো বাদ দিয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা বা উপকারী দিক গুলো সম্পর্কে জেনে নেই:
মোবাইল ফোনের গুরুত্ব ।
আগের সময় গুলোতে আমরা যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করার কথা চিন্তা করতাম তখন আমাদের প্রয়োজন হতো একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ।
কিন্ত বর্তমান সময়ের আধুনিক মোবাইল ফোন গুলো এমন সব প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে আপনারা ভয়েস কল এর সাথে সাথে কম্পিউটার এর মতো internet ব্যবহার করতে পারবেন।
আর এই কারণে মোবাইল ফোন এর গুরুত্ব এবং ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া এর মাধ্যমে আপনারা অনেক সুন্দর এবং আকর্ষনীয় সব গেমস গুল খেলতে পারবেন কম্পিউটার এর মতো।
তাছাড়া, এখান থেকে ১৫ – ২০ বছর আগে কেউ কোনো দিন চিন্ত করেনি ভবিষ্যতে মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করাতে আমাদের জন্য এতটা সহজ হবে।
আমি নিজে যদি একটি স্মার্টফোন ব্যবহার করেন তাহালে একদিন মোবাইল ছাড়া চলাচল করার চেষ্টা করে দেখুন তো? আপনি সহজে বুঝতে পারবেন মোবাইলের ব্যবহার আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
মোবাইল ফোনের বৈশিষ্ট্য –
- সকল GSM ফোনে একটি সিম কার্ড ব্যবহার করা হয়।
- সকল ফোন ব্যবহারকারীকে কথা বলার ও মেসেজ সুবিধা করে।
- সকল ফোনের একটি ব্যাটারি থাকে, যা ফোনের পাওয়ার সরবরাহ করে।
- সেটের কি প্যাড ব্যবহার করে ইনপুটের কাজ করা হয়।
- বর্তমানে আধুনিক স্মার্টফোনে টাচ স্ক্রিন ব্যবহার করে ইনপুট করা যায়।
- প্রতিটি ফোনের একটি IMEI ( International Mobile Equipment Identity)। এটি থাকার ফলে ট্র্যাকার সিস্টেমের মাধ্যমে চুরি হওয়া', বা সেট পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
- সকল ডিভাইসগুলোর একটি একক IMSI ( International Mobile Subscriber Identity) নম্বর থাকে।
মোবাইল ফোন
আধুনিক সভ্যতায় বিপ্লব এনেছে মোবাইল ফোন। এখন সবার হাতে দেখি মোবাইল ফোন। কী আনন্দে লাঠির মাথায় বেঁধে সেলফি তুলে, আর হাসে! শিশু, বৃদ্ধ, কৃষক, রিকশাওয়ালা, ড্রাইভার, গার্মেন্ট কর্মী, খেয়া নৌকার মাঝি- সব শ্রেণীর মানুষের হাতে এখন মোবাইল ফোন।
যে কোনো সময় যে কোনো প্রান্তের মানুষের সঙ্গে যে কোনো খোঁজখবর, সংবাদ, ছবি পাঠাতে, মেসেজ দিতে এটা খুবই জরুরি। সস্তা এবং সময় স্বল্পতা, সবদিক বিবেচনায় মোবাইল ফোন জরুরি হয়ে উঠেছে। আর তার সাথে বেড়ে উঠেছে মোবাইল ফোনের গুরুত্ব।
যোগাযোগ
মোবাইল ফোন বন্ধু, পরিবার, সহকর্মী এবং প্রকৃতপক্ষে বিশ্বের অধিকাংশ জনসংখ্যার সাথে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করার উপায় প্রদান করে।
পূর্ববর্তী যোগাযোগ যন্ত্রের বিপরীতে, এগুলি সর্বদা কলারের জন্য হাতে থাকতে পারে এবং যেকোন জায়গায় যেখানে একটি সংকেত রয়েছে সেখানে ব্যবহার করা যেতে পারে৷
ছবি তোলা ও ভিডিও করা
আধুনিক mobile phone গুলোর মাধ্যমে আপনি ডিজিটাল ক্যামেরার মতো সুন্দর এবং আকর্ষনীয় ছবি তুলতে পারবেন। আমরা এখন সবাই বিভিন্ন স্টাইলে ছবি বা সেলফি তুলতে পছন্দ করি।
তাছাড়া, আপনারা মোবাইল এর মাধ্যমে প্রফোসানাল ভাবে ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন। এমন অনেক ইউটিউব বার রয়েছে যারা মোবাইল ফোন দিয়ে তাদের আপলোড করা বিভিন্ন গুলো রেকর্ড করে।
মনোরঞ্জন করা
বর্তমানের স্মার্টফোন গুলো অনেক ক্ষেত্রে তৈরি করা হয় মানুষের মনোরঞ্জন করার উদ্দেশ্য নিয়ে। এই সব মোবাইল গুলোতে দেওয়া হয় ৫ ইঞ্চি থেকে ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত HD ডিসপ্লে।
যার মাধ্যমে আপনারা মুভি দেখা, ভিডিও গেম খেলা, ইন্টারনেট ব্যবহার, গান শোনা, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে নিজের মনকে মনোরঞ্জন করতে পারবেন।
জিপিএস (GPS) ব্যবহার
আধুনিক মোবাইল গুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে জিপিএস (GPS)। যার মাধ্যমে আপনারা অচেনা জায়গার রাস্তা, স্কুল, কলেজ, হোটেল ইত্যাদি গুলো সহজে খুঁজে বের করতে পারবেন।
আর এই সব কিছু সম্ভব google map এর ব্যবহারের মাধ্যমে। গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে আপনারা এই রাস্তা, স্কুল, কলেজ হাসপাতাল সহ আরো বিভিন্ন জায়গা খুঁজে পাবেন।
ইন্টারনেট ব্যবহার করা
এখান থেকে কয়েক বছর আগে আমরা যখন কেউ ইন্টারনেট ব্যবহার করার কথা চিন্তা করতাম তখন এটা সম্ভব ছিলো শুধুমাত্র কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এর মাধ্যমে।
কিন্ত আজ মোবাইলের মাধ্যমে আপনারা রাত দিন ২৪ ঘন্টা internet ব্যবহার করতে পারছেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন বন্ধুদের সাথে কথা বলা, ভিডিও দেখা, অনলাইন কেনাকাটা করা সব কিছুই করতে পারবেন ইন্টারনেট ব্যবহার করার মাধ্যমে।
মোবাইল দিয়ে টাকা আয়
আপনি হয়তো জানেন ঘরে বসে মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করা যায়। অনেকে মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করছে। এই কাজ গুলো আপনারা চাইলে পার্টটাইম বা ফুলটাইম হিসাবে করতে পারবেন।
তাছাড়া আপনারা মোবাইল দিয়ে কাজ করতে পারবেন যেমন, ইউটিউব থেকে আয়, ব্লগিং করে টাকা আয়, ক্যাপচা টাইপিং সহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবেন।
আমি নিজেও প্রথমে পার্ট-টাইম হিসাবে মোবাইল দিয়ে ব্লগিং শুরু করেছিলাম। কিন্ত এখন কম্পিউটার এর মাধ্যমে প্রফোশনাল ভাবে ব্লগিং করি।
শিক্ষা অর্জন ও গবেষণা করা
বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে আমরা ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস করছি। এজন্য শিক্ষার ক্ষেত্রে মোবাইলের চাহিদা প্রচুর পরিমানে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাছাড়া আপনি যদি নতুন কিছু গবেষনা করতে চান তাহালে মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট থেকে নানা ধরনের তথ্য জানতে পারবেন। মনে করুন আপনি নাসা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। এক্ষেত্রে আপনি মোবাইল থেকে তথ্য জানতে পারবেন।
লাইভ টিভি দেখা
এখনকার সময়ের স্মার্টফোন গুলোতে লাইভ টিভি (tv) দেখার জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনারা মোবাইলের মাধ্যমে প্রত্যেকটি টিভি চ্যানেল গুলো দেখতে পারবেন।
এর জন্য বিভিন্ন অ্যাপস বা সফটওয়্যার পাবেন সেগুলো ফোনে ডাউনলোড করে ইনস্টল করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে tv দেখতে পারবেন। মোবাইলে বড় HD ডিসপ্লে থাকার কারণে দেখে মজা নিতে পারবেন।
(flash light)
অনেক সময় দেখা যায় অতি সাধারণ জিনিস গুলো অনেক কাজে প্রয়োজন হয়। আপনি যখন রাতে চলাচল করবেন তখন অবশ্যই আপনার মোবাইলের টর্চলাইট (flash light) কাজে আসে।
আপনার হাতে থাকা মোবাইলে যদি flash light না থাকতো, তাহালে আপনাকে আলদা করে একটি টর্চলাইট ব্যবহার করতে হতো, যা আপনার কাছে ঝামেলা মনে হতো
ভিডিও কল (video call)
এই সময়ের আধুনিক মোবাইলে সামনে ফন্ট ক্যামেরা এবং পিছনে ক্যামেরা দেওয়া হয়। এই ফন্ট ক্যামেরার মাধ্যমে আমরা খুব সহজে বন্ধু বান্ধব, প্রিয়জনের সাথে ভিডিও কলে কথা বলতে পারি।
গেম খেলা
আগের সময়ে গেম খেলার কথা চিন্তা করলে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এর মাধ্যমে গেম খেলতে হতো। কিন্ত এখনকার সময়ের স্মার্টফোন গুলো এতটা শক্তিশালী করে তৈরি করা হয়েছে যার মাধ্যমে হাই কোয়ালিটির গেমিং করতে পারবেন।
বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় গেম গুলো free fire, pubg, clash of clans এই সব গেম গুলো মোবাইলের মাধ্যমে খেলতে পারবেন। এছাড়া অনেক জনপ্রিয় গেম রয়েছে যা mobile phone মাধ্যমে খেলতে পারবেন।
নোট ও টেক্সট করা
আপনার দৈনিক হিসাব গুলো নোট প্যাডে বা এক্সেল ফাইলে লিখে রাখতে পারবেন খুব সহজে। আমি আমার ব্লগের আর্টিকেল গুলো মোবাইলের মাধ্যমে লিখে থাকি।
একই ভাবে আপনি আপনার ব্যবসা বা অফিসের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো মোবাইল ডিভাইসে লিখে সেব করে রাখতে পারবেন। এর জন্য আপনারা আলদা আলদা মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বা সফটওয়্যার গুগল প্লেস্টর থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম
আপনার হাতের স্মার্টফোন দিয়ে ব্যাংকে না গিয়ে বাড়িতে বসে mobile banking এর banking transaction গুলো করতে পারবেন। মোবাইলের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে টাকা পাঠানো, টাকা গ্রহন, চেক বুক এপ্লাই, ডেবিট কার্ড এপ্লাই সব কিছু করা সম্ভব।
আপনি এই সব কাজ গুলো যদি ব্যাংকে গিয়ে করতেন তাহালে কতটা সময় লাগতো সেটা একবার ভেবে দেখুন। একটি মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করে আপনার সময় কতটা বাঁচিয়ে দিচ্ছে সেটা একবার ভেবে দেখুন।
শিক্ষা ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের উপকারিতা
- স্মার্টফোনের দ্বিতীয় বৃহৎ বাজার ভারত। দেশটিতে ফিচার ফোনের চেয়ে স্মার্টফোনের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। স্মার্টফোন ডিভাইসের চাহিদার বৃদ্ধির সঙ্গে সাক্ষরতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িত রয়েছে।
- বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাইবার মিডিয়া রিসার্চের সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। খবর: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
- সাক্ষরতার হার ও স্মার্টফোন বিক্রির ক্ষেত্রে গভীর সম্পর্ক রয়েছে কিনা, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট গবেষণা হয়নি। তবে তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ভারতের যেসব রাজ্যে সাক্ষরতার হার বেশি, সেসব রাজ্যের মানুষ বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার করেন।
- গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের যেসব রাজ্যে সাক্ষরতার হার বেশি, সেসব রাজ্যের মানুষ ফিচার ফোনের চেয়ে স্মার্টফোন বেশি ব্যবহার করেন। এ কারণে কেরালা, মহারাষ্ট্র, হিমাচল প্রদেশ ও গুজরাটের নাগরিকদের মধ্যে স্মার্টফোন ব্যবহারের প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
- ছাত্রছাত্রীরা মোবাইলের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে ফলে তাদের লেখাপড়ার ক্ষতি হয়।
- অপরাধ প্রবণতার সাথে সহজেই জড়াতে পারে।
- মোবাইল নেটওয়ার্ক মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
- বাচ্চা ছেলেমেয়েরা মোবাইল ব্যবহারে অধিক আকৃষ্ট হচ্ছে।
- এর মাধ্যমে সহজেই অন্যকে ঠকানো যায়।
- এর অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন