শাওমি না স্যামসাং ? কোন ফোনটি ভাল হবে ? জানুন

 


শাওমি না স্যামসাং? কোন ফোনটি ভাল হবে? 


বর্তমানে শুধু আমাদের দেশেই নয় বরং পুরো বিশ্বেই শাওমি ও স্যামসাং সবথেকে জনপ্রিয় দুটি স্মার্টফোন ব্র্যান্ড। দুটি ব্র্যান্ডই প্রতি বছর অনেকগুলো মডেলের ফোন বের করে থাকে বিভিন্ন বাজেটের মধ্যে। স্যামসাং বাজারে মূলত তাদের ফ্ল্যাগশিপ প্রিমিয়াম ফোন দিয়েই জনপ্রিয়তা অর্জন করে। 

অপরদিকে শাওমি কম মূল্যে ভালো স্পেক ও ফিচারের ফোন নিয়ে আসে প্রতি বছরই। তবে স্যামসাংয়ের মতোই শাওমিরও রয়েছে প্রিমিয়াম ফ্ল্যাগশিপ ফোন, আবার কম বাজেটে স্যামসাংয়ের বেশ কিছু ভালো ফোনও বাজারে থাকে। তাই ফোন কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতারা অনেকসময় দ্বিধায় পরে যান কোন ব্র্যান্ডের ফোন নেবেন সেই ব্যাপারে।

ফোন কেনার ক্ষেত্রে ব্র্যান্ড পছন্দ করার ব্যাপারটি মূলত নির্ভর করে আপনি কেমন ফোন কিনবেন এবং কী কাজে বেশি ব্যবহার করবেন তার উপর। তাছাড়া শাওমি ও স্যামসাং ফোনের রয়েছে আলাদা আলাদা সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা। 

এই পোস্ট থেকে আপনারা জেনে নিতে পারবেন শাওমি ও স্যামসাং দুটি ফোন ব্র্যান্ডের আলাদা আলাদা দিক নিয়ে। এরপর আপনি নিজে থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কোন ব্র্যান্ডের ফোন আপনার নেয়া উচিত। তাই পুরো পোস্টটি পড়ে নিন স্মার্টফোন কেনার আগে।


শাওমি ফোনের সুবিধা ও অসুবিধা

শাওমি ফোন

শাওমি একটি চাইনিজ ব্র্যান্ড। তবে শাওমির ফোনগুলো চায়না ছাড়াও ইন্ডিয়াতেও তৈরি হয়ে থাকে। বর্তমানে কিছু নির্দিষ্ট মডেলের শাওমি ফোন বাংলাদেশেও তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশে শাওমির চাইনিজ ফোনগুলো আনঅফিসিয়াল ভাবে পাওয়া যায় বেশিরভাগ সময়। আর ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট এর অফিসিয়াল ও আনঅফিসিয়াল দুই ধরনের ফোনই দেশের বাজারে রয়েছে।

ফোনের ব্র্যান্ড পছন্দের ক্ষেত্রে অনেকেই ব্র্যান্ডটি কোন দেশের সে ব্যাপারে অনেক গুরুত্ব দেন। বাজেট ফোনের ক্ষেত্রে অনেকেই শঙ্কায় থাকেন এই ফোনগুলোর মান সম্পর্কে। 

ধারণাটি সম্পূর্ণ অমূলকও নয়। মূলত ফোন উৎপাদনের সময় খুব বেশি সময় পরীক্ষা করা হয় না বলে এই সমস্যাগুলো দেখা দিয়ে থাকে। বাজেট ফোনগুলোর দাম স্পেক ও ফিচার অনুযায়ী কম হয়ে থাকে। আর এই দাম কম রাখতেই মানের ক্ষেত্রে হয়ত কিছুটা ছাড় দিতে হয় নির্মাতাকে।

তবে শাওমির বড় শক্তির জায়গাটিও এখানে। আপনার বাজেট যদি অল্প হয়ে থাকে তবে সেই বাজেটে নিশ্চিতভাবেই শাওমি সবথেকে ভালো ও ফিচারযুক্ত ফোন দেবে। বাজারে অন্য ব্র্যান্ডের ফোনগুলোর ক্ষেত্রে সেটি পাবেন না। 

চাইনিজ ব্র্যান্ডগুলো ফোন তৈরির ক্ষেত্রে কম খরচ করে বলেই এটি সম্ভব হয়। কম বা মিড বাজেটে শাওমি বেশি মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা দিয়ে থাকে। ছবিও ভালো হয়ে থাকে শাওমির ফোনগুলোর ক্ষেত্রে। তবে ছবি প্রসেসিংয়ের ক্ষেত্রে শাওমি বরাবরই কিছুটা পিছিয়ে।

শাওমি অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে ফোনগুলো বাজারে এনে থাকে যাতে দেয়া থাকে শাওমির মডিফাই করা অ্যান্ড্রয়েড স্কিন যার নাম ‘মি ইউআই‘। এই স্কীনে থিম, কাস্টোমাইজেশনের অনেক অপশন দেয়া থাকে। তাই অনেকেরই এই স্কিন পছন্দ। 

বিভিন্ন রকম বাড়তি ফিচার থাকায় মি ইউআই নিজের মতো সাজিয়ে নেয়া যায়। তবে শাওমি তাদের ফোনের দাম কম রাখতে অনেক রকম ব্লোটওয়্যার ইনস্টল করে দেয় যা অনেকেরই বিরক্তির কারণ। এছাড়া তারা বিভিন্ন স্থানে বাড়তি অ্যাড দেখানোর মাধ্যমেও আয় করে থাকে। ফলে অনেকের কাছে শাওমির মি ইউআই অপছন্দের। তাছাড়া বাগের সংখ্যাও মি ইউআইতে মোটামুটি চোখে পড়ে।

তবে প্রসেসিং পাওয়ার ও চিপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে শাওমি বরাবরই এগিয়ে থাকে। বাজেটের মধ্যে সবথেকে শক্তিশালী চিপের ব্যবহার করে থাকে শাওমি বেশিরভাগ সময়। তাই যারা গেম খেলে থাকেন বা ভারী কাজ করে থাকেন তাদের কাছে শাওমি ফোনগুলো পছন্দের হয়ে থাকে। তাছাড়া দ্রুত চার্জ দেয়ার সুবিধা বা ফোনের ডিজাইনের ক্ষেত্রেও শাওমি এগিয়ে থাকে বেশিরভাগ সময়।


স্যামসাং ফোনের সুবিধা ও অসুবিধা

স্যামসাং ফোনে

স্যামসাং একটি কোরিয়ান ব্র্যান্ড এবং প্রযুক্তির জগতে অনেক বছর ধরেই পরিচিত একটি নাম। তাদের ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রচুর এবং ফোনের মানের ক্ষেত্রে স্যামসাং সবসময়ই নিজেদের সুনাম ধরে রাখতে চেষ্টা করে। অনেক ক্রেতাই স্যামসাংকে পছন্দ করেন ব্রান্ড হিসেবে তাদের পরিচিতির জন্য।

স্যামসাং তাদের ফোনগুলো তৈরির ক্ষেত্রে অনেক বেশি সময় নিয়ে পরীক্ষা করে তারপর সেটি বাজারে আনে। আর ফোন তৈরির ক্ষেত্রে তাই স্যামসাংয়ের খরচ বেশি হয় বলে দামের ক্ষেত্রে এর প্রভাব দেখা যায়। কম বা মধ্যম বাজেটের ফোনে স্যামসাং সবসময়ই স্পেক বা ফিচারের দিক দিয়ে চাইনিজ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফোন থেকে পিছিয়ে থাকে। তবে স্যামসাং ফোনের মান সচরাচর ভালো হয়ে থাকে। ফলে স্যামসাং ফোনের আলাদা আকর্ষণ সবসময়ই থাকে ক্রেতাদের মাঝে।

সেই সাথে স্যামসাং তাদের ফোনে নিজেদের মডিফাই করা অ্যান্ড্রয়েড স্কিন ওয়ান ইউআই দিয়ে থাকে। ওয়ান ইউআইকে বলা যায় বর্তমানে অন্যতম সেরা অ্যান্ড্রয়েড স্কিন। আপডেট থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাড়তি ফিচার এই স্কীনে থাকে। সেই সাথে বাগের সংখ্যাও অল্প হয়ে থাকে স্যামসাংয়ের ফোনগুলোতে। তাই যারা ঝামেলাবিহীনভাবে ফোন ব্যবহার করতে চান তারা স্যামসাং ফোনকেই পছন্দ করে থাকেন। 

এছাড়া স্যামসাংয়ের ফোনের ছবি প্রসেসিং বেশ ভালো হয়ে থাকে। এছাড়া স্যামসাংয়ের ডিসপ্লের তুলনা নেই বর্তমান বাজারে। স্যামসাংয়ের প্রতিটি ফোনের ডিসপ্লে খুবই সুন্দর ছবি দেখাতে পারে বলে যারা ফোনে প্রচুর ভিডিও দেখে থাকেন তাদের পছন্দ স্যামসাংয়ের ফোনগুলো। 


শাওমি না স্যামসাং কোনটি কিনবেন ?

শাওমি ও স্যামসাংয়ের সমস্যা ও সুবিধাগুলো জানলেন। এখন আপনি কোন কাজে ব্যবহার করবেন ও কেমন বাজেটে ফোন কিনবেন তা নিজে থেকেই সিদ্ধান্ত নেয়া ভালো।

মূলত আপনি যদি সাধারণ ব্যবহারকারী হন এবং ফোন কিনে নিশ্চিন্ত থাকতে চান তবে স্যামসাং ফোন কেনাই ভালো হবে। কেননা স্যামসাং ফোনে বাগ তেমন থাকবে না এবং দীর্ঘ সময় আপডেট পাবেন। তাছাড়া অ্যাড বা ব্লোটওয়্যারের ঝামেলাও কম।

তবে বাজেট কম থাকলে শাওমি ফোনের দিকে দৃষ্টি দেয়া উচিত। কম বাজেটে ল্যাগমুক্ত ও ভালো স্পেক দেবে এমন ফোন চাইলে শাওমি সেরা। বাজেট বেশি হলে শাওমির ফোনের থেকে স্যামসাংয়ের ফোন আপনাকে বেশি সুবিধা দেবে। কিন্তু কম বাজেটের ক্ষেত্রে শাওমি সেরা সব ফিচার ও সুবিধা নিয়ে আসে। তাছাড়া যারা ফোন রুট করতে চান এবং টেকনিক্যাল ভালো জ্ঞান রাখেন তাদের ক্ষেত্রেও শাওমি বেশি সুবিধা দেয়।

দীর্ঘ সময় ফোন ব্যবহার করতে চাইলে বাজেট বাড়িয়ে স্যামসাং ফোন নিলে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন। তবে বাজেট বাড়ানো সম্ভব না হলে শাওমি হতে পারে আপনার পছন্দের ফোন।

শেষ কথা,

শাওমি নাকি স্যামসাং কোন ফোনটি নেবেন তার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি আপনার। দুটি ব্র্যান্ডের ফোনেরই আলাদা সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। তাই কোন সুবিধা আপনি চান সেটির উপর নির্ভর করেই ফোনের ব্র্যান্ড পছন্দ করা উচিত।


আরো পড়ুন:

  1. আই ফোন সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত কোনো 
  2. প্রসেসর কি 
  3. বাংলাদেশে dslr ক্যামেরার দাম 
  4. সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?
  5. বিশ্বের সেরা 11টি জনপ্রিয় অনলাইন মোবাইল গেম
  6. নতুন গেমিং ল্যাপটপ 2022
  7. নতুন গেমিং পিসি 2022 |
  8. ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা দামের মধ্যে ভালো ফোন 
  9. কম্পিউটার ভাইরাস কি ? কম্পিউটারে ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কি ?
  10. 10000-এর নীচে সেরা ফোন 


0/পোস্ট এ কমেন্ট/Comments