মোবাইলে ভিডিও এডিট করার সেরা অ্যাপ
যেকোনো ডিভাইসের জন্যই ভিডিও এডিটিং একটি ভারী কাজ। কম্পিউটারেই যেখানে ভিডিও এডিট করতে গিয়ে র্যাম আর স্পেসিফিকেশন এর জটিলতায় ভুগতে হয়, সেখানে স্মার্টফোনে ফাইনাল কাট প্রো কিংবা এডোবি প্রিমিয়ার প্রো এর মত কার্যকরী সফটওয়্যার এর আশা করাটা উচ্চাশাই হয়ে যায়। কিন্তু আপনার যদি একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকে এবং আপনি ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে আপনার কখনো কখনো মোবাইলেও ভিডিও এডিট করতে হতে পারে।
আপনি জেনে খুশি হবেন যে তবে স্মার্টফোনের জন্য এমন কিছু ভিডিও এডিটিং অ্যাপ রয়েছে, যেগুলোতে সত্যিকার অর্থেই অনেক ভালো মানের ভিডিও এডিটিং সক্ষম। এসব অ্যাপ আপনি মানসম্পন্ন ভিডিও আউটপুট পেতে ব্যবহার করতে পারবেন।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এই অ্যাপগুলোর ফ্রি ভার্সন রয়েছে এবং আপনি চাইলে অনেকগুলোর ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম ভার্সনও নিতে পারবেন। আর দেরি নয়, চলুন কথা বলি স্মার্টফোনের জন্য সেরা ১০টি ভিডিও এডিটিং অ্যাপ নিয়ে।
কাইনমাস্টার
ফোনে ভিডিও এডিটিং নিয়ে যারা একটু হলেও সময় ব্যয় করেছেন, তাদের কাছে কাইনমাস্টার নামটা অজানা নয়।
সাধারণ ভিডিও এডিটিং, যেমন ট্রিমিং, ক্রপিং থেকে শুরু করে ভিডিও লেয়ারিং এর মত এডভান্সড সব ফিচারে ঠাসা অ্যাপটি। কাইনমাস্টারে রয়েছে অডিও ফিল্টার, ভিডিও ট্রান্সজিশান, ভিডিও ইফেক্ট এবং আরো অনেককিছু। যে কারণে অ্যাপটি বেশি খ্যাতি অর্জন করেছে, এর মধ্যে প্রধান হলো ক্রোমা-কি ফিচারটি।
এই ফিচার ব্যবহার করে ভিডিওতে থাকা গ্রিন স্ক্রিন রিমুভ করে পছন্দসই ভিডিও বা ছবি এড করা যায়। যদিওবা এটি কম্পিউটার এর ভিডিও এডিটরগুলোর মত অত শক্তিশালী নয়, তবে ফোনের জন্য কাইনমাস্টার অ্যাপটি ভিডিও এডিটর হিসেবে ব্যবহারকারীদের পছন্দের শীর্ষেই অবস্থান করছে।
তবে আপনার ভিডিওতে যথেষ্ট পরিমাণ ব্যাকগ্রাউন্ড লাইট থাকলে কাইনমাস্টারের ক্রোমা কি ভালো আউটপুট দিতে সক্ষম। মোবাইল অ্যাপ হওয়ায় আপনি এর সকল অপশন পাচ্ছেন নখদর্পনে যা এর আরেকটি ভাল দিক বলতেই হবে।
ফিল্মোরা গো
ওয়ান্ডারশেয়ার এর অ্যাপ ফিল্মোরা গো, একটি ফ্রি ভিডিও এডিটিং অ্যাপ, যা বিনামূল্যে অনেক টুলস এবং ফিচার এর সুবিধা প্রদান করছে।
ফিল্মোরা গো অ্যাপটিতে থাকছে ব্যাসিক ভিডিও এডিটিং টুলস, যেমন ট্রিম, কাট, রেন্ডার ইত্যাদি। আরো থাকছে রিভার্স ভিডিও, ইন্সটাগ্রাম এ প্রচলিত স্কয়ার ভিডিও (১:১) এবং ইউটিউব এর জন্য ১৬:৯ রেশিওতে ভিডিও তৈরীর সু্যোগ।
এসব সুবিধার পাশাপাশি আরো থাকছে স্লো-মোশন, ট্রানজিশান, ভিডিও ফিল্টার, ওভারলে, এমনকি গান এড করার সু্যোগ। যদিওবা অ্যাপটিতে অধিকাংশ ফিচারই বিনামূল্যে উপভোগ করা যাবে, এছাড়াও বাড়তি অর্থ ব্যয়ের বিনিময়ে পাওয়া যাবে বাড়তি প্রিমিয়াম ফিচার।
পাওয়ারডিরেক্টর
পাওয়ারডিরেক্টর একটি অল-ইন-ওয়ান ভিডিও এডিটিং অ্যাপ। অসংখ্য ভিডিও এডিটিং টুলস, ফিচার এবং ইফেক্টস এ ভর্তি পাওয়ারডিরেক্টর অ্যাপটি। অ্যাপটিতে রয়েছে কোলাজ মেকার, স্লো মোশন এর মত অসাধারণ সব ফিচার। ক্লাসিক টাইমলাইন এডিটর ইন্টারফেস থাকায় অ্যাপটি নিয়ে কাজ করা অত্যন্ত সহজ।
মূলত আপনি যদি বড় ডিসপ্লে এর ডিভাইস, যেমন ফোল্ডেবল, ট্যাবলেট কিংবা ক্রোমবুক ব্যবহার করে থাকেন, তবে পাওয়ারডিরেক্টর অ্যাপটি আপনাকে হতাশ করবেনা।
ইনশট
আপনি যদি ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম কিংবা টিকটক উপযোগী ভিডিও এডিটিং এর অ্যাপ এর খোজ করে থাকেন, তবে ইনশট অ্যাপটি আপনার জন্য স্বস্তির নিশ্বাস বয়ে আনবে।
ইনশট অ্যাপ ব্যবহার করে ভিডিওতে গান, ভয়েসওভার, ইফেক্ট এড করা যায়। এছাড়াও স্টিকার এবং টেক্সট যুক্ত করার সুযোগও থাকছে।
এতে স্লো মোশন, ফাস্ট মোশন এবং হরেকরকম ফিচারও থাকছে। এতসব সুবিধার পাশাপাশি ব্যাসিক এডিটিং ফিচার, যেমন কাট, ক্রপ, ট্রিম এসব তো থাকছেই। ভিডিওর পাশাপাশি ছবি এডিটিং এর সুবিধাও থাকছে অ্যাপটিতে।
এডোবি প্রিমিয়ার রাশ
এই তালিকায় থাকা অন্যান্য অ্যাপগুলো থেকে অপেক্ষাকৃত নতুন হলেও এডোবি প্রিমিয়ার রাশ অ্যাপটির কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ করার কোনো কারণ নেই। এডোবি এর কম্পিউটার সফটওয়্যার, প্রিমিয়ার প্রো এর সুনাম ভালোভাবেই অক্ষুন্ন রেখেছে এই অ্যাপটি।
ব্যাসিক সব ভিডিও এডিটিং ফিচার এর পাশাপাশি কিছু বাড়তি সুবিধাও দিচ্ছে অ্যাডোবি প্রিমিয়ার রাশ। যদিওবা মাল্টি ট্র্যাক সিংকিং, ক্লাউড সিংকিং এর মত অত্যাধুনিক সুবিধাগুলো উপভোগ করতে ব্যবহারকারীদের একটি নির্দিষ্ট অংকের অর্থ খরচ করতে হবে।
শেষ কথা,,
তো বন্ধুরা আজ আমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাকে জানানো হলো ভিডিও/ছবি জোড়া লাগানোর সফটওয়্যার মোবাইল এবং কম্পিউটার দিয়ে সম্ভব।
আপনি যদি ফটো জোড়া লাগাতে আগ্রহী থাকেন। তাহলে অবশ্যই যে কোন অ্যাপস বা সফটওয়্যার ডাউনলোড করে নিতে পারেন। আর আমাদের দেওয়া আর্টিকেল আপনার কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন