দারাজ কি ? দারাজ থেকে আয় করার উপায় কি ?

 


দারাজ কি ? দারাজ থেকে আয় করার উপায় কি ?


ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশ, ইন্টারনেটের উদ্ভব ও বিকাশ এবং কাগজের মুদ্রার বাইরেও ইলেকট্রনিক বিনিময় প্রথা চালু হওয়ার ফলে বাণিজ্যেরও একটি বিশেষ পরিবর্তন এসেছে। এখন ইলেকট্রনিক মাধ্যমেও বাণিজ্য করা যায়, যার প্রচলিত নাম ই-কমার্স বা ই-বাণিজ্য (E-commerce business)।


দারাজ হলো একটি সেরা ই-কমার্স বা ই-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান। যেটি অনেক সফলতার সাথে ক্রেতাদের পণ্য সেবা প্রদান করে আসছে।

যেকোনো পণ্য বা সেবা বাণিজ্যের কয়েকটি শর্ত থাকে। প্রথমত বিক্রেতার কাছে পণ্য থাকা। দ্বিতীয়ত ক্রেতা কর্তৃক তার বিনিময় মূল্য পরিশোধ করা। এর প্রধান পদ্ধতি হলো বিক্রেতার সঙ্গে ক্রেতার সরাসরি যোগাযোগ।

কিন্তু ইন্টারনেটের যুগে একজন বিক্রেতা তার পণ্যের ছবি, ভিডিও দিয়ে ইন্টারনেটেই তার দোকানটি খুলে বসতে পারেন।

এজন্য তার প্রতিষ্ঠানের একটি ওয়েবসাইট চালু করতে হয়। ক্রেতা অনলাইনে তার পছন্দের পণ্যটি পছন্দ করেন এবং মূল্য পরিশোধ করেন।

দেশে বর্তমানে বিভিন্ন ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে এই মূল্য পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (Mobile banking) মাধ্যমেও মূল্য পরিশোধ করা যায়।

তৃতীয়ত মূল্য প্রাপ্তির পর বিক্রেতা তার পণ্যটি ক্রেতার ঠিকানায় নিজে অথবা পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের (কুরিয়ার সার্ভিস) মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন মোবাইল বা কার্ড ছাড়াও ই-কমার্সে আরো একটি বিল পরিশোধ পদ্ধতি রয়েছে। এটিকে বলা হয় প্রাপ্তির পর পরিশোধ বা ক্যাশ অন ডেলিভারি (COD)।

এই পদ্ধতিতে ক্রেতা বিক্রেতার ওয়েবসাইটে বসে পছন্দের পণ্যটির অর্ডার দেন। বিক্রেতা তখন পণ্যটি ক্রেতার কাছে পাঠিয়ে দেন। ক্রেতা পণ্য পেয়ে বিল পরিশোধ করেন। এইরকম একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হলো দারাজ।


দারাজ কি ? (What is Daraz in Bengali)

দারাজ হলো দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এসিয়ার একটি অনলাইন বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। দারাজ পাকিস্তানে ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

রকেট ইন্টারনেটের (Rocket Internet) উদ্যোগে মুনীব ময়ূর (প্রতিষ্ঠাতা) এবং ফারেস শাহ্ (সহ-প্রতিষ্ঠাতা) দারাজকে দারাজকে অনলাইন ই-কমার্স বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। দারাজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (Chief Executive Officer) বুজার্কি মিক্কিলেসেন।

দারাজ বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান এবং নেপালে তাদের বাণিজ্য পরিষেবা প্রদান করে থাকে।

রকেট ইন্টারনেট ২০১৮ সালে চীনের আলিবাবা গ্রুপের (Alibaba Group) কাছে ই-কমার্স কোম্পানি দারাজ গ্রুপকে (Daraz Group) বিক্রি করে দেয়।

দারাজ আজ থেকে ১০ বছর আগে ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। দারাজের প্রতিষ্ঠাতা কোম্পানি হলো রকেট ইন্টারনেট। দারাজ মূলত ৫ টি দেশে ই-কমার্স পরিষেবা প্রদান করে থাকে। দারাজের বাণিজ্য অঞ্চল হলো বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা।

দারাজের প্রতিটি বাণিজ্য অঞ্চলের জন্য আলাদা আলাদা ওয়েবসাইট রয়েছে। যেমনঃ


তাহলে দারাজ কি (What is Daraz in Bengali) এই বিষয়ে আশা করি আপনারা জানতে পেরেছেন।


দারাজ ডট কম (Daraz.com) থেকে আয়

বাংলাদেশে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি খুব দ্রুত লাভ করে চলেছে। দারাজ মূলত একটি ই-কমার্স স্টোর। যা 20+ রও বেশি ক্যাটাগরিতে 10 মিলিয়নেরও বেশি পণ্য সরবরাহ করে।

বৈদ্যুতিন ডিভাইস থেকে শুরু করে হোম অ্যাপ্লায়েন্সস, স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য থেকে গ্রোসারি এবং শিশুর পণ্য ইত্যাদি – যা তাদের অনলাইন স্টোরে পাওয়া যায়। স্টোরটি প্রতি মাসে 2 মিলিয়ন প্যাকেজ সরবরাহ করে এবং শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়ানমার, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানে এর শাখা রয়েছে।

দ্রুত বিতরণ, ঝামেলা-মুক্ত রিটার্ন এবং ফেরত, গ্রাহক সমর্থন এবং আরও অনেক বিষয়ে তাদের গ্রাহককেন্দ্রিক নীতিগুলি দারাজকে অনেক গ্রাহকের পছন্দের অনলাইন শপিং গন্তব্যে পরিণত করেছে।

বর্তমানে মানুষ তার চাহিদার সকল প্রোডাক্টই অনলাইন থেকে ক্রয় করতে পছন্দ করে। বাংলাদেশের প্রায় সবাই এখন দারাজ ডট কমের সাথে পরিচিত। তাই আপনি সহজেই দারাজ থেকে আয় করতে পারবেন।

বাংলাদেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে Daraz.com তাদের সাফল্যের মাইলফলক স্থাপন করেছে। বাংলাদেশে প্রতিদিন তাদের হাজার হাজার প্রোডাক্ট বিক্রি হচ্ছে। আপনি চাইলেই খুব সহজে দারাজ ডট কম থেকে আয় করতে পারবেন।


পেমেন্ট প্রসেস ও অন্যান্য সুবিধা

Daraz.com কম থেকে ইনকাম করার জন্য অ্যাফিলিয়েশন প্রোগ্রামে যোগ দিলে যে সকল সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো:

বিক্রিত পণ্যের উপর শতকরা ৯% কমিশন পাওয়া যায়। এর অর্থ হলো, আপনি যদি এমন কোন প্রোডাক্ট সিলেক্ট করেন যার মূল্য ১০০০ টাকা এবং কমিশন ৯% । তাহলে কোন ক্রেতা যদি আপনার ওয়েবসাইটের লিঙ্কে প্রবেশ করে সেটি ক্রয় করে,তাহলে প্রতিবার বিক্রি করার সময় আপনি ৯০ টাকা করে কমিশন লাভ পাবেন ।

যদি কোন গ্রাহক আপনার লিংক থেকে দারাজ ডট কমে যায় তাহলে উক্ত গ্রাহক তার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যেও যদি সরাসরি দারাজ ডট কমে যেয়ে প্রোডাক্টটি ক্রয় করে তাহলেও আপনি আপনার কমিশন পাবেন।

বাংলাদেশের যে কোন ব্যাংকের মাধ্যমে আপনি আপনার কমিশন গ্রহণ করতে পারবেন।

আপনি অ্যাফিলিয়েশন প্রোগ্রামে যোগ দেন তবে আপনাকে সব সময় সহযোগীতা করার জন্য দারাজের রয়েছে একদল দক্ষ সাপোর্ট টিম।

আপনার ওয়েবসাইট থেকে আসা গ্রাহকদের বিভিন্ন তথ্য দেখার ও যাচাই করার শক্তিশালি ড্যাশবোর্ড রয়েছে।

তাছাড়া অ্যাফিলিয়েশনের পাশাপাশি আপনি তাদের অ্যাড পার্টনারশীপ প্রোগ্রাম পাবেন। যার মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে তাদের দেয়া বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করতে পারবেন।

অ্যাফিলিয়েশন কনসেপ্ট অনলাইনে নতুন কোন বিষয় নয়। তবে ইংরেজী ভাষায় একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাংক করাতে হলে অনেক পরিশ্রম এবং দক্ষতা প্রয়োজন।

তাছাড়া এভাবে কাজের জন্য অনেক বেশি বিনিয়োগও করতে হয়। কারণ ইংরেজী ভাষায় দক্ষতার অভাবের কারণে আমাদের সাধারণত বাইরের কোন ফ্রিল্যান্সারকে দিয়ে কন্টেন্ট লেখাতে হয় যা সাধারণত অনেক বেশি ব্যয়বহুল।


শেষ কথা 

তাহলে বন্ধুরা আজ এখানেই থাকল। কীভাবে দারাজ থেকে আয় করতে পারবেন আশা করি সে সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা দিতে পেরেছি। ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু। আর যদি কোন কিছু জানার বা অভিযোগ থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমরা উওর দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। ধন্যবাদ।


আরো পড়ুন:


0/পোস্ট এ কমেন্ট/Comments