ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং কাজ করার এর জন্য ভালো ল্যাপটপ ।
আমরা যারা ফ্রিল্যান্সিং করতে চাই আমাদের মনে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন জেগে থাকে। প্রথমে যে প্রশ্নটি জেগে থাকে সেটি হলো যে, ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ল্যাপটপ কিনব নাকি ডেক্সটপ কিনব। তো যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মের বড় ধরনের কাজ করতে চান।
তাহলে অবশ্যই আপনাকে ডেক্সটপ কিনতে হবে। কিন্তু আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের সাধারণ কাজ গুলো করতে চান। যেমন, কনটেন্ট রাইটিং, ডাটা এন্ট্রি সহ গ্রাফিক্স ডিজাইনের ছোটখাটো সেক্টরের জব করতে চান। তাহলে আপনার ল্যাপটপের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব হবে।
কিন্তু যখন আপনি ল্যাপটপ কিনতে যাবেন, তখন আপনার মনে আরও একটি প্রশ্ন জেগে থাকবে। সেটি হল যে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ধরনের ল্যাপটপ ভালো হবে। কেননা আপনি যদি আপনার মানসম্মত ল্যাপটপ কিনতে না পারেন।
তাহলে কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ গুলো করার সময় নানা প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। আর সে কারণেই মূলত ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য কোন ধরনের ল্যাপটপ ভালো হবে । সে সম্পর্কে আপনার আগে থেকেই পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত।
আজকের আর্টিকেলে আমি মূলত এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। কারণ আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল থেকে আপনি জানতে পারবেন যে, ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ধরনের ল্যাপটপ ভালো হবে । তাহলে আর দেরি না করে চলুন সরাসরি মূল আলোচনায় ফিরে যাওয়া যাক।
আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কোনটি ভালো ?
বর্তমানে আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় পেশা । ছোট থেকে শুরু করে সকল তরুণ-তরুণী এই পেশা খুবই পছন্দ করে। কারণ ফ্রিলান্সিং পেশায় আপনার ইচ্ছা মত কাজ করতে পারবেন। কিন্তু আউটসোর্সিং করতে আপনার একটা ডিভাইসের প্রয়োজন হবে।
ডিভাইস বলতে আপনি যে যন্ত্রটি দ্বারা, আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করবেন। ফ্রিল্যান্সিং শেখার ডিভাইসের মধ্যে রয়েছে কম্পিউটার ও ল্যাপটপ। নতুন যারা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে তাদের মনে একটা প্রশ্ন থাকে, আউটসোর্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভাল বা ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো হবে।
নতুন যারা আউটসোর্সিং শুরু করে, তারা অনেক এই সমস্যায় পড়ে যায় ল্যাপটপ নিয়ে। তাদের এই সমস্যাটি দূর করতে চলে এলাম আমরা। আজকে আমরা আপনাদের সামনে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো ও আউটসোর্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভাল তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই আজকের আর্টিকেল এড়িয়ে না গিয়ে মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
মূল কথাই যাওয়া যাক -
আউটসোর্সিং এর জন্য ল্যাপটপ ভালো । কিন্তু এটা নির্ভর করে আপনার কাজের ওপর। আউটসোর্সিং জগতে অনেক সেক্টর রয়েছে। আপনি যে সেক্টরে কাজ করবেন, সেই কাজ অনুযায়ী ল্যাপটপ কিনতে হবে। আপনি যদি সাধারন ব্লগিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ করেন।
এক্ষেত্রে একটা সাধারণ ল্যাপটপ হলেই চলবে। কারণ ব্লগিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য আপনাকে বেশি সফটওয়্যার ইন্সটল করতে হবে না। এইজন্য ব্লগিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য একটি সাধারণ ল্যাপটপ হলে চলবে।
কিন্তু আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিং এর কাজ শিখতে চান। এখন সাধারন ল্যাপটপ দিয়ে কাজ চলবে না। আপনাকে ভালো মানের ল্যাপটপ কিনতে হবে। কারণ আপনি যখন ভিডিও এডিটিং করবেন, তখন সাধারণ ল্যাপটপের স্পীড ও কনফিগারেশন ভালো থাকতে হবে। তাহলে আপনি সেই ল্যাপটপ দিয়ে কাজ ভালোভাবে সম্পূর্ণ করতে পারবেন। তাই ভালো ল্যাপটপ কিনতে হবে।
1. HP Envy 13 ল্যাপটপ
আমাদের দেশে এইচপি কোম্পানির ল্যাপটপ অনেক জনপ্রিয়। কারণ এই ল্যাপটপের পারফরমেন্স অনেক ভাল। দাম অনেক তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী। তাই মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেরা ল্যাপটপ কিনে থাকে। আউটসোর্সিং এর জন্য এই ল্যাপটপটি অনেক ভালো।
এই ল্যাপটপ থেকে রয়েছে ৮ জিবি RAM। সাথে থাকছে ৫০০ জিবি হার্ডডিস্ক। যা আপনার সকল তথ্য সংগ্রহ করবে। এছাড়াও এই ল্যাপটপ থেকে রয়েছে আকর্ষণীয় কিবোর্ড ও মাউস। ফ্রিল্যান্সিং এর জন্যে লাগে ভালো প্রসেসর।
যা আপনার বড় বড় ফাইল লোড হতে সাহায্য করে। ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ হলো সারাদিন অনলাইনে থাকা। অনলাইনে থাকতে হলে আপনার ল্যাপটপের কনফিগারেশন ভালো থাকতে হবে। এইচপি ল্যাপটপ কনফিগারেশন অনেক ভালো। ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য বেস্ট ল্যাপটপ এটি।
2. HP EliteBook 840 ল্যাপটপ
এইচপির আরেকটি ভালো মডেলের ল্যাপটপ হলো HP EliteBook 840. এটা মূলত নোটপ্যাডের পথে একটি ল্যাপটপ । কিন্তু এর কার্যক্রম অনেক ভালো মানের । কারণ এই ল্যাপটপের ৬ জিবি রম। যা ছোট তুলনায় অনেক বেশি।
এছাড়াও এই ল্যাপটপ থেকে পাবেন আপনি ব্যাটারি ব্যাকআপ পাবেন। আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতে হলে ব্যাটারি ব্যাকআপ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমাদের দেশে লোডশেডিং লেগে থাকে সারাদিন । লোডশেডিং এর হাত থেকে র'ক্ষা পেতে। আপনি এই ল্যাপটপ কিনতে পারেন।
এছাড়াও অনেকে পার্টটাইম জবের পাশাপাশি আউটসোর্সিং হয়। এই ল্যাপটপের ডিসপ্লে ১৩ ইঞ্চি। আপনি সহজেই যেখানে সেখানে নিয়ে যাবেন। তুলনামূলক ছোট ও ব্যাটারি ব্যাকআপ ভালো বলে এই ল্যাপটপ অনেক বিক্রি হয় । সকল ফ্রিল্যান্সারদের এই ল্যাপটপটি অনেক পছন্দের।
3. Microsoft Surface Book 2 Laptop
মাইক্রোসফট কোম্পানি পৃথিবীর বিখ্যাত কোম্পানি । মাইক্রোসফট কোম্পানির সকল পণ্য অসাধারণ। মাইক্রোসফট কোম্পানির ল্যাপটপ অনেক ভালো। আউটসোর্সিং এর জন্য ভালো ল্যাপটপের সন্ধান করছেন। তাহলে আজি কিনে ফেলুন Microsoft Surface Book 2।
দাম তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হলেও, আপনার আউটসোর্সিং জন্য অনেক ভালো হবে। আউটসোর্সিং তো এক দিনের কোনো পেশা নয়। আউটসোর্সিং হল দীর্ঘমেয়াদি একটা পেশা। এই দীর্ঘমেয়াদী পেশার সঙ্গে যুক্ত হতে হলে, আপনার একটা ভালো মানের ল্যাপটপ দরকার।
ভিডিও এডিটিং জন্য বেস্ট ল্যাপটপ হল মাইক্রোসফট। এছাড়াও যারা গ্রাফিক্স ডিজাইন ফটোশপের কাজ করতে পারেন। তাদের জন্য বেস্ট এই ল্যাপটপ। তাই দেরি না করে ল্যাপটপ কিনে ফেলুন।
4. Dell XPS 15 Laptop
আউটসোর্সিং শেখার জন্য বেস্ট ল্যাপটপ Dell XPS 15. এই ল্যাপটপটি দিয়ে গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং ও এসইও ইত্যাদি স্বাচ্ছন্দে করতে পারবেন।
আপনি ডেল কোম্পানীর সকল ল্যাপটপ দিয়ে গ্রাফিক ডিজাইন এর কাজ করতে পারেন। কিন্তু ভিডিও এডিটিং করতে হলে ভালো ল্যাপটপ লাগবে। শুধু ল্যাপটপ হলে হবে না এর প্রসেসর ভালো লাগে। প্রসেসর হলো কম্পিউটারের প্রাণ। প্রসেসর এর পাশাপাশি ভালো RAM গুরুত্বপূর্ণ।
ল্যাপটপের আর একটি প্রয়োজনীয় বিষয় হলো RAM . যা আপনি এই ল্যাপটপে পাবেন। এই ল্যাপটপের ৮ জিপি রাম থাকবে। পাশাপাশি থাকবে এসএসডি। এসএসডি ল্যাপটপের একটি নতুন ফিচার। এসএসডি আপনার ল্যাপটপকে দুই গুণ স্পিরিট দিবে। এই ল্যাপটপেও থাকছে এসএসডি কার্ড।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য ল্যাপটপ কেনার আগে কীজানা জরুরি ?
সাধারণ কাজের জন্য আপনি যেকোন ল্যাপটপ কিনতে পারেন। কিন্তু আউটসোর্সিং জন্য ল্যাপটপ কিনতে হলে,আপনাকে কিছু দিক নির্দেশনা মানতে হবে। কারণ সব ধরনের ল্যাপটপ দিয়ে আউটসোর্সিং এর কাজ করা যায় না। আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য আপনাকে ভালো মানের ল্যাপটপ কিনতে হবে। নিচের বিষয়গুলো মাথায় রেখে অবশ্যই আউটসোর্সিং এর জন্য ল্যাপটপ কিনবেন।
- মাদারবোর্ড
ল্যাপটপ কেনার আগে প্রথমে মাদারবোর্ড চেক করতে হবে। মাদারবোর্ড হলো ল্যাপটপের প্রাণ। যদি আপনার ল্যাপটপের মাদারবোর্ড ভাল কনফিগারেশন হয়। তাহলে অনেকদিন ব্যবহার করতে পারবেন।
- প্রসেসর
প্রসেসর হচ্ছে আপনার ল্যাপটপের গতি নিয়ন্ত্রণ করে। সর্বনিম্ন core i3 প্রসেসর এর ল্যাপটপ কিনবো। এছাড়াও আরো আপডেট প্রজন্মের প্রসেসর কিনলে আরো ভালো হবে। আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতে হলে আপনার ভালো মানের প্রসেসর কিনতে হবে।
- এসএসডি
ল্যাপটপ একটি নতুন ফিচার এসএসডি। এসএসডি র্যাম হার্ডডিক্স এর কাজ করবে। এছাড়াও এসএসডি লাগানো থাকলে আপনার ল্যাপটপ অনেকগুলি স্পিড পাবেন।
- হার্ডডিক্স
হার্ডডিক্স সোজা কথায় মেমোরি কে বোঝায়। আপনার ল্যাপটপের হার্ডডিস্ক অবশ্যই 500gb বেশি হতে হবে। কারণ আপনি হার্ডডিক্স এর বিভিন্ন ধরনের ফাইল রাখবে। আউটসোর্সিং এর জন্য আপনার বিভিন্ন রকম ভিডিও রাখার প্রয়োজন হয়।
- RAM
আপনার ল্যাপটপকে কত দ্রুত চলে এটা নির্ভর করে রামের উপরে। সর্বনিম্ন 4 জিবি র্যাম আছে এমন ল্যাপটপ কিনবেন। যত বেশি হবে আপনার ল্যাপটপের স্প্রিট তত বেশি হবে।
শেষ কথা,,
আপনাকে ভালো মানের ল্যাপটপগুলো দেখিয়ে দিয়েছি । আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভাল এই প্রশ্নের উত্তর ইতিমধ্যে পেয়ে গেছেন। এছাড়াও যদি আমার আউটসোর্সিং বিষয়ে কোন তথ্য জানতে চান। অবশ্যই আমাদের ব্লগে কমেন্ট করবেন । ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো এই বিষয়ে যদি প্রশ্ন করার থাকে তাহলে কমেন্ট করবেন। আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে নতুন নতুন আপডেট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন