স্বাস্থ্য সম্পর্কে কিছু কথা যা আপনার জানা দরকার |
পুষ্টিমানসম্পন্ন ও সুষম খাবার খাবেন। খাবারের তালিকায় বেশি করে ফল আর সবজি রাখুন। মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত রাখে এমন খাবার, বিশেষ করে বাদাম কিংবা পালংশাকের মতো খাবার খান।
ব্যায়াম করুন
মানসিকভাবে ভালো থাকতে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকাটাও জরুরি। শরীরকে সক্রিয় রাখতে সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম করলে সুখ হরমোন নিঃসৃত হয়। মানসিকভাবে হালকা বোধ করতে বা মন ভালো রাখতে নিয়মিত ব্যায়ামের চর্চা করে যান।
নিয়মমাফিক চলুন
দৈনিক কাজের একটি নিয়ম দাঁড় করান। সময়ের কাজ সময়ে করুন। নিয়ম মেনে খাওয়া, ঘুম থেকে জাগা বা বিছানায় যাওয়ার বিষয়টি মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য দরকারি। যাঁরা নিয়ম মেনে চলেন, তাঁদের মানসিক ও শারীরিক দিক থেকে সুস্থ থাকার হার বেশি বলেই গবেষণায় দেখা গেছে।
যন্ত্রের ব্যবহার সীমিত করুন
এখনকার সময় মানুষের হাতে হাতে মোবাইল ফোন কিংবা মনোযোগ কেড়ে নেওয়া নানা যন্ত্র রয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে যতটা সম্ভব যন্ত্রের ব্যবহার সীমিত করুন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে মোবাইল ফোনসহ যন্ত্র ব্যবহার বাদ দিন। এমনকি দিনের বেলাতেও যন্ত্র যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
সক্রিয় থাকুন
সংবাদপত্র পড়ে, পাজল মেলানো, ক্রসওয়ার্ড সমাধান করার মতো নানা কাজে মস্তিষ্ককে ব্যস্ত রাখুন। মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকলে স্মৃতিশক্তি উন্নত হবে, এমনকি শেখার দক্ষতা বাড়বে। তথ্যসূত্র: জিনিউজ।
১৯৪৮ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘স্বাস্থ্য’–এর যে সংজ্ঞা দিয়েছিল, তা আজও অমলিন। সেখানে বলা হয়েছিল, ‘কেবল নিরোগ থাকাটাই স্বাস্থ্য নয়; বরং শারীরিক, মানসিক, আত্মিক ও সামাজিকভাবে ভালো থাকার নামই স্বাস্থ্য।’ অথচ কার্যত এই সংজ্ঞার খণ্ডিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয় প্রতিনিয়ত, কখনো সচেতনভাবে, আবার কখনো অসচেতনতায়। ফলে দীর্ঘদিন ধরে ‘স্বাস্থ্য’ শব্দটি সীমাবদ্ধ হয়ে ছিল ‘শারীরিক’ অংশটুকুর মধ্যে। তবে আশার কথা এই যে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেরিতে হলেও বাংলাদেশে ‘মানসিক স্বাস্থ্য’ বিষয়টি ধীরলয়ে প্রবেশ করছে স্বাস্থ্যব্যবস্থার মূল আঙিনায়। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার লক্ষ্য ৩–এ সুস্বাস্থ্য আর কল্যাণ অর্জনের জন্য আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুহার হ্রাস, মাদকের অপব্যবহার কমিয়ে আনা, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ; লক্ষ্যমাত্রা ৮–এ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার নিশ্চিতকরণ; লক্ষ্য ১০–এ অসমতা হ্রাস করতে হলে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা (ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজ) অর্জনের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব না দেওয়ার কোনো উপায় নেই, কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্যসেবার ইতিহাসে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই উপেক্ষিত ছিল। বিগত কয়েক বছরে স্বাস্থ্য খাতের নীতিনির্ধারকেরা বিষয়টির দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন সত্যি, কিন্তু অনেক দিনের মরচে পড়া, পিছিয়ে থাকা বিষয়টিকে সত্যিকারের অর্থবহ করতে সাধারণ গতিতে চললে পিছিয়েই থাকতে হবে। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য জরিপ ২০১৮-২০১৯ অনুযায়ী প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মানসিক রোগের হার ১৬.৮% এবং শিশু কিশোরদের মধ্যে এ হার ১৩.৬%। এর বিপরীতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মাত্র ২৬০ জন, প্র্যাকটিসিং সাইকোলজিস্টের সংখ্যা ৬০০–এর কাছাকাছি। ২০০ শয্যার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ৫০০ শয্যার পাবনা মানসিক হাসপাতালসহ দেশে সরকারি পর্যায়ে মানসিক রোগের জন্য অন্তর্বিভাগে মোট শয্যার সংখ্যা ৮৫০–এর কাছাকাছি। ১৬ কোটি মানুষের জন্য এই অপ্রতুল সম্পদ নিয়ে মানসম্মত মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার অসম্ভব কাজটি কিন্তু করে যাচ্ছেন আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যে কর্মরত ব্যক্তিরা! স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দকৃত বাজেটের মাত্র শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য খাতে। দেশের বেশির ভাগ মেডিকেল কলেজে মানসিক রোগ বিভাগগুলো জনবল আর সুবিধায় অপরিপূর্ণ, সব কটিতে নেই অন্তর্বিভাগ। সবচেয়ে করুণ অবস্থা মেডিকেল শিক্ষার স্নাতক পর্যায়ে। নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী, পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য মানসিক রোগ অন্তর্বিভাগে হাতে–কলমে শিক্ষার সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে। চতুর্থ বর্ষে শিক্ষার্থীরা যখন ব্যস্ত থাকেন প্যাথলজি আর অন্যান্য প্যারাক্লিনিক্যাল বিষয় নিয়ে, তখন তাঁদের মানসিক রোগের ওয়ার্ডে পাঠানো হয়, যা একদমই কার্যকরী নয়। লিখিত পরীক্ষায় মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রায় নেই করে দেওয়া হয়েছে, মৌখিক পরীক্ষায়ও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পূর্ণ উপেক্ষিত। ইন্টার্ন করার সময় মানসিক রোগ বিভাগে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের থাকার সুযোগ মাত্র সাত দিন! অন্যান্য দেশের মেডিকেল কারিকুলামের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, আমরা বিষয়টিকে মেডিকেল শিক্ষার শুরু থেকেই কম গুরুত্ব দিয়ে আসছি। ১৯৭৮ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের আলমা আটায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের যৌথ ঘোষণাপত্রে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার খুঁটিনাটি বিবৃত হয়েছিল। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার উপাদানের মধ্যে ছিল স্বাস্থ্যশিক্ষা, রোগনিয়ন্ত্রণ, সম্প্রসারিত টিকা কার্যক্রম, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের উন্নয়ন, প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করা, পুষ্টি, পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা এবং সাধারণ রোগগুলোর চিকিৎসা। এগুলোর মধ্যে সরাসরি মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বলা না হলেও প্রায় প্রতিটি উপাদানের সঙ্গেই মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি যুক্ত। সাধারণ স্বাস্থ্যশিক্ষা কখনোই পূর্ণাঙ্গ হবে না, যতক্ষণ মানসিক স্বাস্থ্যশিক্ষা না হচ্ছে। রোগনিয়ন্ত্রণ করতে হলে শারীরিক-মানসিক সব রোগকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, বিশেষত কিছু শারীরিক সমস্যায় মানসিক রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়, আবার কিছু মানসিক সমস্যা শারীরিক লক্ষণ নিয়ে প্রকাশ পেতে পারে। মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারলে শিশুর মানসিক প্রতিবন্ধিতাসহ নানাবিধ জন্মগত ত্রুটির পাশাপাশি মায়ের প্রসব–পরবর্তী মানসিক সমস্যা দূর করা সম্ভব। পুষ্টিমান নিশ্চিত করা না গেলে বুদ্ধির বিকাশ ও মানসিক বৃদ্ধি যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে না। কেবল বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের সর্বত্র মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টি নানা কারণে অন্ত্যজ হয়ে আছে আর আমাদের দেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে মানসিক রোগ নিয়ে আছে নানা অন্ধবিশ্বাস, মিথ ও অপচিকিত্সার ছড়াছড়ি। মানসিক স্বাস্থ্য আর মানসিক রোগ নিয়ে আমাদের নানা ভ্রান্ত ধারণা আর কুসংস্কার রয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য আর মানসিক রোগ নিয়ে আমাদের নানা ভ্রান্ত ধারণা আর কুসংস্কার রয়েছে। ছবি: প্রথম আলো এবার কিছু আশার কথা। নেই নেই করেও আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এগিয়ে চলেছে, বিশেষ করে গত ১০ বছরে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল মানসিক স্বাস্থ্যকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০১৮ সালে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয় এবং এর শয্যাসংখ্যা দ্বিগুণ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্য সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের নেতৃত্বে অটিজম এবং স্নায়ুবিকাশজনিত সমস্যা বিষয়ে জাতীয় কর্মকৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়, যা বিশ্বের জন্য একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ১০৮ বছরের পুরোনো ইন্ডিয়ান লুনাসি অ্যাক্ট বাতিল করে ‘জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য আইন ২০১৮’ জাতীয় সংসদে পাস করা হয়। এই আইন মানসিক রোগীদের অধিকার নিশ্চিত করার একটি মাইলফলক।
৩৩৩ কল সেন্টার
১। নামঃ ৩৩৩
২। শর্ট কোডঃ 333 (যে কোন মোবাইল হতে)
৩। লং কোডঃ 09666789333 ( টেলিফোন ও বিদেশ হতে)
৪। কল চার্জঃ ৬০ পয়সা / মিনিট
৫। অপারেশনঃ ২৪X৭ এবং ১X৩৬৫
৬। উদ্দেশ্যঃ
- জাতীয় তথ্য বাতায়নের সকল ওয়েবসাইটের তথ্য প্রদান;
- সকল সরকারি সেবা প্রাপ্তির পদ্ধতির তথ্য প্রদান;
- বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সম্পর্কিত তথ্য প্রদান;
- সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগের তথ্য প্রদান;
- সামাজিক সমস্যা প্রতিকারে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নিকট অভিযোগ দাখিল;
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন