বিটকয়েন অর্থ কি?
বিটকয়েন অর্থ কি?
ইলেকট্রনিক মুদ্রা ,যা ধরা বা ছুয়া যায় না, যেমন বিকাশের টাকা। বিট কয়েনকে বলা হয় ’ভর্চুয়াল গুল্ড”।দেশের প্রচলিত ভার্চুয়াল মুদ্রার সাথে এর প্রার্থক্য হল এর কোন কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক নেই।
পৃথিবী যত সামনের দিকে এগোচ্ছে টাকার ভেলো দিন দিন কমছে। আজ থেকে দশ বছর আগে আপনি যে পরিমান টাকা দিয়ে যে পরিমাণ জিনিস ক্রয় করতে পারতেন এখন কিন্তু সেটা আর সম্ভব হয়ে উঠছে না, তার মানে কি আপনার টাকার ভেলু কমে যাচ্ছে!! আর এটা সকল দেশের কারেন্সির ক্ষেত্রেই ঘটেছে।
বিটকয়েন আবিষ্কারক কে?
২০০৯ সালে জাপানি নাগরিক সাতোশি নাকামোতা নামের একজন বা একদল সফটওয়ার বিজ্ঞানী ক্রিপ্টোকারেন্সির উদ্ভাবন করেন।
তাদের উদ্ভাবনের উদ্দেশ্য ছিল যেহেতু বিশ্ব বাজারে স্বর্ণের চাহিদা দিন দিন কমছে এবং কারেন্সি ভেলু ও দিন দিন কমছে তাই এমন একটি মুদ্র আবিস্কার করা চাই যেটা হবে সার্বজনীন। যার ভেলু আছে এবং সরাসরি লেনদেন করা যায়,কোন মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না।
বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে ?
দেখুন, বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে, এই প্রশ্নটি বেশি জটিল ভাবে নিয়ে কোনো লাভ নেই।
চলুন, আমরা সহজ ভাষায় জেনেনেই যে, বিটকয়েন কাজ কিভাবে করে।
আমি আগেই বলেছি যে, বিটকয়েন হলো এক রকমের ইলেক্ট্রনিক মুদ্রা বা ডিজিটাল মুদ্রার।
এবং, এই ধরণের মুদ্রা ব্যবহার, আদান প্রদান বা কেনা বেচার জন্য, ইন্টারনেটের প্রয়োজন।
উদাহরণ স্বরূপে,
আজকাল অনেক ধরণের online wallet apps রয়েছে, যেমন “paytm“, “freecharge” ইত্যাদি।
যেভাবে, টাকা হাথে না ধরে বা চোখে না দেখেই এই wallet app গুলি ব্যবহার করে, আমরা নিজের app থেকে অন্যের wallet app এ টাকা ডিজিটালি ট্রান্সফার করে দিতে পারি, ঠিক সেভাবেই, বিটকয়েন ও এমনি একটি virtual money র প্রকার, যেটা না কোনোদিন হাথে ধরে দেখতে পারবেন আর না চোখে দেখতে পারবেন।
এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া ইন্টারনেটের মাধ্যমে virtually বা digitally সম্পন্ন করা হয়।
তবে, বিটকয়েন কেনা বেচা বা আদান প্রদান করার জন্য আপনার যেকোনো একটি “বিটকয়েন এপস (apps)” বা “ওয়েবসাইট” ব্যবহার করতে হবে।
ওয়েবসাইট বা এপস টির মাধ্যমেই, আপনার কাছে থাকা bitcoin এর সাংখ্যিক মান বা পরিমান দেখতে পারবেন।
এবং, বিটকয়েনের এই ওয়েবসাইট বা এপস গুলির মাধ্যমেই আপনি প্রয়োজন হিসেবে বিটকয়েন কিনে নিতে ও বিক্রি করতে পারবেন।
সাধারনে, লোকেরা বিটকয়েন তখন কিনে রাখেন, যখন মার্কেটে এর চাহিদা (demand) কমে আসে।
কারণ, যখন মার্কেটে এর চাহিদা কম থাকবে, তখন প্রত্যেক bitcoin এর value বা দাম কোমে যাবে।
তাই, কম টাকা খরচ করে অধিক bitcoin কিনে নিতে পারবেন।
আবার, যখন bitcoin এর চাহিদা মার্কেটে আবার বেড়ে আসবে, তখন এর দাম বেশি থাকবে।
এবং, এটাই সেই সময় যখন কম দামে কেনা বিটকয়েন আপনি আবার বিক্রি করে, অধিক লাভ বা টাকা আয় করে নিতে পারবেন।
বিটকয়েন কেন এত জনপ্রিয়?
একটা কথা আছে প্রচারে প্রসার সেটাই ঘটেছে বিট কয়টেনের ক্ষেত্রে। ২০১৩ সালে মুদ্রাটির বাজার মুল্য হয়ে উঠে প্রায় ১০ হাজার ডলার তার পর থেকে মুদ্রাটি ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করে। অনলাইনে ডলার, ইউরোর কিনার মত বিটকয়েন কেনা যায়।এর জনপ্রিয়তার মুল কারন এর ব্যক্তিক কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানা থাকে না। অন্যান্য মুদ্রার বেলায় যেমন সরকার কিংবা কেন্দ্রীয় ব্যাংক জড়িত থাকে ,তাদের মাধ্যমেই টাকার ট্রান্সিশন ঘটে কিন্তু ক্রিপ্টোকারেন্সির বেলায় সম্পূর্ণ ভিন্ন।
কীভাবে কাজ করে ডিজিটাল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সি।
ক্রিপ্টোকারেন্সি এক ধরনের বিকেন্দ্রিকরণ পদ্ধতির মাধ্যমে কাজ করে। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইনের মাধ্যমে নিরাপদে অর্থ লেনদেন করা যায়।লেনদেনকারীর সকল তথ্য এক্ষেত্রে গোপন থাকে। কোথা থেকে টাকা পাঠাচ্ছে কিংবা কোথা থেকে টাকা আসছে তার কোন হদিছ থাকে না, এখানে শুধু ব্যবহারকারীদের একটি করে ওয়ালেট একাউন্ট থাকে। ওয়ালেট খুলে সরাসরি টাকা ট্রান্সফার করা যায়। কোন ব্যাংক কিংবা তৃতীয় পক্ষের দারস্থ হতে হয় না। প্রচলিত মুদ্রার মত এর কোন সরকারি কিংবা কোন প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানা থাকে না। মাইনিং নামে একধরনের ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে ক্রিপ্টোকারেন্সি তৈরি হয়। ব্লকচেইনের মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সি কাজ করে ।
ব্লকচেইন হল এক বিস্তৃত নেটওয়ার্কের নাম। বিশ্বের অসংখ্য কোম্পিউটারকে সংযুক্ত করে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে যার মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন এবং পর্যবেক্ষণ করা হয়। এই বিস্তৃত নেটওয়ার্কে ব্যবস্থার নাম হল ব্লকচেইন। ব্লকচেইন ব্যবহার করে সাধারণ লেনদের সহ বন্ড, স্টক ও অন্যান্য আর্থিক সম্পদের কেনাকাটা করা যায়।
বিটকয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সির কিভাবে কাজ করে?
আপনি চাইলে অনলাইনে ব্রোকারদের কাছ থেকে এ মুদ্রা কিনতে পারেন। কিপ্টোগ্রাফি নামে এক ধরনের ওয়ালেট ব্যবহার করে মুদ্রা রাখা হয়।এটি একটি ডিজিটাল মুদ্রা তাই দিন দিন এর চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে এর দাম ও বেড়েই চলছে অনেক শেয়ার বাজারের মত উঠানামা করে ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার।
বিটকয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেন কিভাবে হয়?
ক্রিপ্টোগাফিতে ২৭ থেকে ৩৪ অক্ষরের একটি আইডি খুলে ইন্টারনেটে একাউন্ট খুলে এই মুদ্রা লেদেন করা যায়।
বিটকয়েন লেনদেন কোন ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রয়োজন হয় না। ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে দুজন ব্যবহার কারীর মধ্যে পিয়ার-টু-পিয়ার আদান -প্রদান ঘটে। লেনদেনর নিরাপত্তার জন্য কিপ্টোগ্রাফি নামে এক ধরনের পদ্ধতি ব্যববহার করা হয়।
বিটকয়েন সম্পর্কিত সাধারণ প্রশ্নোত্তর
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত বিটকয়েন আইনীভাবে স্বীকৃতি বা বৈধতা পায়নি। তাই বলা যায় বাংলাদেশে থেকে বিটকয়েন ব্যবহার না করাই ভাল।
বিটকয়েন (Bitcoin) এর সংক্ষিপ্ত রুপ হলো বিটিসি।
হ্যাঁ, বিটকয়েন হলো সর্বাধিক সমাদৃত ক্রিপটোকারেন্সি।
যেসব দেশে বিটকয়েন বৈধ সেসব দেশে থেকে অন্যসব সম্পদের মতো বিটকয়েন কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রির মাধ্যমে অর্থ আয় সম্ভব।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন