লন্ডনে বসবাসকারী এক মহিলা অ্যাপলের সবচেয়ে দামি আইফোন অর্ডার করেন ও আইফোনের বদলে হাতে পান ১ডলার মূল্যের হ্যান্ডসোপ। ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দামি কিছু অর্ডার করে ভুল প্রডাক্ট ডেলিভারি পাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। যদিওবা এই ধরনের ঘটনা খুব কমই ঘটে থাকে, তবে অনলাইন শপিং এর ক্ষেত্রে অনেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেন এসব ঘটনার কারণে।
ফিরে আসা যাক আসল ঘটনায়। খাওলা লাফায়েল নামের এক ভদ্রমহিলা স্থানীয় একটি নামীদামী শপ থেকে আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স অর্ডার করেন। কিছুদিনের মধ্যে তার দরজায় এসে পৌঁছায় এক অদ্ভুত সারপ্রাইজ। যে বক্সে হাজার ডলারের আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স থাকার কথা, সে বক্সে তিনি খুঁজে পেলেন ১ ডলার সমমান মূল্যের হ্যান্ড সোপ রিফিল এর বোতল!
অ্যাপল ইনসাইডার এর রিপোর্ট অনুসারে, এখানে ফ্রড সংঘটিত হয়েছে ডেলিভারির সময়। উক্ত আইফোন স্কাইমোবাইল এর কাছ থেকে ৩৬মাসের কন্ট্রাক্টে কেনা হয়। অর্থাৎ উক্ত মহিলা তৎক্ষনাৎ ফোনের সম্পূর্ণ দাম পরিষোধ করেননি, তিনি প্রতি মাসে ফোনের ইএমআই পরিশোধ করতেন। অর্ডার করা আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স এর মূল্য ১৫০০ মার্কিন ডলার।
আইফোন কেনার সময় উক্ত মহিলা পরবর্তী দিন ডেলিভারির অপশন নির্বাচন করেন। তবে ডেলিভারি হতে সময় লাগে দুইদিন ও ডেলিভারি কর্মী জানান যে ট্রাফিকের কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রোডাক্ট ডেলিভারি করা সম্ভব হয়নি। রিপোর্টে জানা যায় ডেলিভারি কর্মী উক্ত মহিলার রেসিডেন্স একাধিকবার ভিজিট করার পরেও প্রোডাক্ট ডেলিভার করেনি।
প্রোডাক্ট প্রদানের বদলে দরজার ছবি তোলেন ঐ ডেলিভারি কর্মী ও ঘরে কেউ নেই বলে রেকর্ডে লিপিবদ্ধ করেন। কিন্তু উক্ত সময়ে লাফায়েল ঘরে ছিলেন ও তিনি দাবি করেন উক্ত ডেলিভারি কর্মী দরজায় কোনো ধরনের নক না করেই স্থান ত্যাগ করেন।
পরে তিনি যখন ডেলিভারি বক্স হাতে পান তখন আইফোনের বদলে হ্যান্ড সোপ এর রিফিল বোটল পেয়ে তিনি অবাক হয়ে যান। উক্ত ঘটনার জের ধরে তিনি স্কাইমোবাইল এর নিকট অভিযোগ দাখিল করেন। লোকাল ক্যারিয়ার জানায় যে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সুরাহা হয়েছে বলে জানা যায়নি। উল্লেখিত ঘটনা পর্যালোচনা করলে ধারণা করা যায় ডেলিভারি কর্মী উক্ত আইফোন চুরি করেছে।
ভুল প্রোডাক্ট ডেলিভারির বিষয়টি কিন্তু নতুন কোনো বিষয় নয়। বিশেষ করে দামি প্রোডাক্ট ডেলিভারির ক্ষেত্রে এই বিষয় ঘটে থাকে। অনেক সময় কুরিয়ার সার্ভিসের ক্ষেত্রেও এমন গড়িমসি দেখা যায়। কয়েকমাস আগে ভারতের কেরালায় একজন ব্যক্তি আইফোন ১২ অর্ডার করেন ও ডেলিভারি হিসেবে পান ডিসওয়াশিং সোপ এর বার ও ৫রুপির কয়েন।
গত বছর কলোরাডোর এক ভদ্রলোকের সাথেও একই ধরনের প্রতারণা সংঘটিত হয়। উক্ত ভদ্রলোক অ্যামাজনে ৭০০০ডলার সমমূল্যের সনি আলফা ১ ক্যামেরা অর্ডার করেন। ডেলিভারিতে তিনি খালি বক্স হাতে পান।
তবে এটি কি প্যাকেজিং এর সমস্যা নাকি অন্যকিছু, তা সম্পর্কে জানা যায়নি। তবে উল্লেখিত লন্ডনের আইফোন প্রতারণা ও কলোরাডোর ক্যামেরা প্রতারণার বিষয় দুইটি প্রায় একই ধরনের বলা চলে।
অনলাইন শপিং এর ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রতারণা হরহামেশাই ঘটতে থাকে। এই কারণে অনেকে অনলাইন শপিং থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলছেন। এক প্রোডাক্ট অর্ডার করে অন্য প্রোডাক্ট হাতে পাওয়ার বিড়ম্বনার কারণে অনেকে সরাসরি মার্কেটে গিয়ে প্রোডাক্ট কিনতে অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো এই ধরনের প্রতারণা শক্ত হাতে দমনের জন্য বদ্ধ পরিকর।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন